পুলিশ স্মরণ দিবস উপলক্ষে বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখার্জি ভারতীয় পুলিশ বাহিনী (আইপিএফ)-এর প্রতি দেশের জন্য তাদের অবিচল সেবার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। অভিনেত্রীর এই মন্তব্য তাঁর আসন্ন চলচ্চিত্র “মর্দানি” সিরিজের তৃতীয় পর্বের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
উদ্দেশ্যপূর্ণ স্যালুট
মর্দানি ৩ মুক্তির আগে মুখার্জি সারা দেশের পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে প্রকাশ্যে সম্মান জানানোর সুযোগ নেন। তিনি বলেন, “আমার জন্য এটি গর্বের বিষয় যে আমি আমার চলচ্চিত্র সিরিজ ‘মর্দানি’-র মাধ্যমে ভারতীয় পুলিশ বাহিনীকে স্যালুট জানাতে পারছি। আমি দেশের প্রতিটি কোণে কর্মরত পুলিশদের কঠোর পরিশ্রমকে সম্মান জানানোর প্রতিটি সুযোগের অপেক্ষায় থাকি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের প্রতিটি প্রান্তে পুলিশ সদস্যরা মানুষের সুরক্ষার জন্য নিজেদের জীবন বাজি রাখছেন, ব্যক্তিগত সময় উৎসর্গ করছেন। তাঁদের কাজের মহত্ব শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”
ইউনিফর্মের আড়ালের মানুষ
মুখার্জি কেবল ইউনিফর্ম নয়, বরং এর পেছনের মানুষটির প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা কখনো ভুলে যাব না যে এই ইউনিফর্মের পেছনে এমন একজন মানুষ আছেন যিনি ভালো কাজের পথ বেছে নিয়েছেন, নিঃস্বার্থ সেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং দেশকে সবার আগে রেখেছেন। তারা কারও ছেলে, মেয়ে, স্বামী, স্ত্রী, বাবা বা মা।”
তিনি আরও যোগ করেন, “তাদের নিঃস্বার্থ সাহস আমাকে ভয়হীনভাবে বাঁচতে অনুপ্রাণিত করে। তারা ঘর ছাড়েন, ফেরার নিশ্চয়তা ছাড়াই। তারা বিপজ্জনক অপরাধ ও অপরাধীদের মুখোমুখি হন সিংহের মতো। জাতির সেবায় তারা নিজেদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি ত্যাগ করেন — এর চেয়ে নিঃস্বার্থ কিছু হতে পারে না।”
মর্দানি সিরিজের পুনরারম্ভ
মুখার্জির এই শ্রদ্ধাঞ্জলি তাঁর আইকনিক চরিত্র ইন্সপেক্টর শিবানি শিবাজি রায় হিসেবে প্রত্যাবর্তনের সঙ্গেও মিলে গেছে। এবার তিনি অভিনয় করছেন আসন্ন চলচ্চিত্র মর্দানি ৩-এ, যা পরিচালনা করেছেন অভিরাজ মিনাওয়ালা এবং প্রযোজনা করেছেন আদিত্য চোপড়া, যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে। সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ।
মুখার্জি বলেন, তিনি এই চলচ্চিত্রকে শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং পুলিশের কাজকে সম্মান ও তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে দেখেন। “আমি মর্দানির মাধ্যমে তাঁদের সম্মান জানাতে ভালোবাসি। ভারতীয় পুলিশ বাহিনী আমাদের সকলের কাছে সাহস, নিষ্ঠা ও অটল দেশপ্রেমের প্রতীক হওয়া উচিত — এবং আমরা সকলেই তাঁদের কাছ থেকে শিখে দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা উচিত।”
পুলিশ দিবসে এর তাৎপর্য
পুলিশ স্মরণ দিবস (অথবা পুলিশ শহিদ দিবস) প্রতি বছর পালিত হয় তাঁদের স্মরণে, যারা কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও মুখার্জির বক্তব্য বিনোদন জগত থেকে এসেছে, এটি পুলিশের ঝুঁকি ও আত্মনিবেদনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে। (প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লির ন্যাশনাল পুলিশ মেমোরিয়ালে স্বাধীনতার পর থেকে সেবায় প্রাণ হারানো হাজারো পুলিশ অফিসারদের স্মরণ করা হয়।)
এই দিনে তাঁর বার্তা সমন্বয় করে মুখার্জির এই পদক্ষেপ জনপ্রিয় সংস্কৃতি ও নাগরিক শ্রদ্ধাবোধের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে, যা পুলিশের জীবনের বাস্তবতা ও মানবিক দিকগুলিতে আরও মনোযোগ আকর্ষণ করে।
ভবিষ্যতের দিকে: নাগরিকদের প্রতি বার্তা
তাঁর বক্তব্যে মুখার্জি শুধু বাহিনীকে শ্রদ্ধা জানাননি, বরং জনগণের কাছেও একটি আহ্বান রেখেছেন — “ইউনিফর্মের আড়ালের মানুষটিকে চিনুন এবং তাঁদের কাজ ও ত্যাগ যেন কখনো অদৃশ্য না হয়।”
তিনি ইঙ্গিত দেন যে, পুলিশিং শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব নয়, এটি সমাজের সম্মান ও বোঝাপড়ার ওপরও নির্ভর করে। তাঁর ভাষায়, “আমরা সকলেই তাঁদের কাছ থেকে শিখে দেশের জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করা উচিত।”
শেষ কথা
মর্দানি ৩ মুক্তির প্রাক্কালে রানি মুখার্জির ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রকৃত বীরত্ব শুধুমাত্র পর্দার গল্প নয় — বাস্তব জীবনেরও। পুলিশের ঝুঁকি, ত্যাগ ও মানবিকতার স্বীকৃতি তাঁর বিনোদনমুখী প্ল্যাটফর্মকে একটি গভীর তাৎপর্য দেয়। ইউনিফর্মের আড়ালের নারী-পুরুষদের উদ্দেশে তাঁর এই বার্তা কৃতজ্ঞতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন হিসেবে অনুরণিত হয়।
– সোনালি




